এম.আর, মাহামুদ ঃ
দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা প্রতিনিয়ত মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে হর হামেশা অবৈধ পন্য বাহী ও বৈধ কাগজপত্র বিহীন মূল্যবান গাড়ি ও মোটর সাইকেল আটক করে থাকে। আটককৃত এসব গাড়ী থানা বা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে খোলা আকাশের নিচে বছরের পর বছর বৃষ্টিতে ভিজে আর রোদে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এদিকে কারো নজর নেই। অথচ এসব গাড়ী মূল্য হিসাব করলে কোটি কোটি টাকা ছড়িয়ে যাবে। জব্দকারী সংস্থার মতে ইয়াবাসহ বিভিন্ন অবৈধ পণ্য পাচার ও কাগজপত্র বিহীন এসব গাড়ী আটক করে নিয়মিত মামলা রুজু করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আদালত এসব মামলা চুড়ান্ত নিষ্পত্তি না করা পর্যন্ত গাড়ীগুলো কিছুই করা যাচ্ছেনা। তবে অনেক ক্ষেত্রে গাড়ীর মালিক বৈধ কাগজপত্র আদালতে উপস্থাপন করে নোহা, মাইক্রো, ভক্সি, কার, ট্রাক ও বাস জিন্মায় নিয়ে যাচ্ছে। আর যেসব মালিক বৈধ কাগজপত্র নিয়ে আদালতের মাধ্যমে জিন্মা নিচ্ছেনা সেসব গাড়ী অযতœ ও অবহেলায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে এসব মূল্যবান গাড়ীর যন্ত্রাংশ খোয়াও যাচ্ছে। সারাদেশে বিভিন্ন থানা ও পুলিশ ফাড়িতে কি পরিমাণ গাড়ী পড়ে আছে তার সঠিক পরিসংখ্যান যথাযথ কর্তৃপক্ষ ছাড়া দেয়া সম্ভব বলে মনে হয়না। পুলিশ ইচ্ছা করলে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে চলাচলরত প্রতিটি গাড়ী তল্লাসী চালালে প্রতিদিনই হাজার হাজার মোটর সাইকেল জব্দ করা কোন ব্যাপারই না। বেশির ভাগ মোটর সাইকেলের ক্ষেত্রে রেজিষ্ট্রেশন ও চালকের লাইসেন্স নেই। কিন্তু পুলিশ এসব দেখেও অনেক ক্ষেত্রে না দেখার কৌশল অবলম্বন করে। তবে কালে ভাদ্রে কিছু গাড়ী আটক করতে গিয়ে থানা ও ফাড়ি এলাকার বেশিরভাগ অংশ এসব অবৈধ গাড়ীতে পরিপুর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞ জনদের অভিমত মোটর সাইকেলের মাধ্যমে ইদানিং অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ছিনতাই, ইয়াবা পাচারসহ বিভিন্ন অপকর্মে বৈধ কাগজপত্রহীন মোটর সাইকেল নিয়ে সংগঠিত হচ্ছে। এছাড়া মোটর সাইকেল চুরিও আশংকাজনক করে বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে পুলিশের মোটর সাইকেলও প্রতিনিয়ত চুরি হচ্ছে। কিন্তু লাজ লজ্জায় এসব কথা কাউকে পাচার করছেনা। দায়িত্বশীল সুত্রমতে বৈধ কাগজপত্র বিহীন জব্দকৃত মোটর সাইকেল ও মূল্যবান গাড়ীগুলো আদালতের নির্দেশক্রমে নিলামের ব্যবস্থা করা হলে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় করতে পারত। কিন্তু বিলম্বিত বিচার ব্যবস্থার কারণে এসব হচ্ছেনা। ফলে বিভিন্ন থানায় বেশুমার মূল্যবান গাড়ী নষ্ট হয়ে স্ক্রাপে পরিণত হচ্ছে। আইন মানুষের কল্যাণে প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনের কল্যানে মানুষ সৃষ্টি হয়নি। আইনের যথাযথ প্রয়োগ হলে সব সময় মানুষের কল্যাণ হবে। মূল্যবান সম্পদ রক্ষা পাবে। চট্টগ্রাম মহানগরীর একটি থানার সামনে যে পরিমাণ মোটর সাইকেল মওজুদ রয়েছে তা দেখলে অবাক বনে যাওয়ার কথা অথচ আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় এসব গাড়ী বছরের পর বছর পড়ে থাকায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চলাচল অযোগ হয়ে পড়েছে। তাকি দেশের জন্য কল্যাণকর। অনুরূপ ভাবে মফস্বলের থানা হিসেবে কক্সবাজারের চকরিয়া থানার পশ্চিম পাশেও সরকারী পুলিশের গাড়ী রাখার সেটটি এখন জব্দকৃত মোটর সাইকেলের দখলে চলে গেছে। এছাড়া ছড়িয়ে ছিটিয়েও রয়েছে বেশ কিছু মোটর সাইকেল। এগুলো জরুরী ভাবে আদালতের মাধ্যমে নিলামে বিক্রি করা না হলে অতি অল্প সময়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। বিষয়টি নিয়ে বেরসিক এক ব্যক্তি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় মন্তব্য করতে শোনা গেছে থানায় আটককৃত গাড়ীগুলো “কোলত মারে, পুচ্ছন নদে” যার সহজ অর্থ কোলে মেরে ফেলবে, তবে দত্তক দেবেনা, এতো আর হয়না।
পাঠকের মতামত: